Saturday, 29 January 2022

রান্নাঘরে চুপচাপ ছুরির নিচে  
খটখটে শব্দে চালিয়ে যাচ্ছিলাম
পেঁয়াজ-কাঁচামরিচ কুচি করতে ,
কোনো এক দুপুরবেলা।
তুমি হয়তো ক্লান্ত শ্রান্ত পথিক
ঢাকা শহরের বিরক্তকর ট্র্যাফিকের 
মাঝেও ,থেমে নেই তোমার ছুটে চলা। 

আমি হয়তো সন্ধ্যা নাগাদ হুটহাট
লোডশেডিং এ আলো জ্বালাই ,
তুমি হয়তো এলিয়ে দিয়ে শরীরটাকে
দিনের সমস্ত ক্লান্তি, প্রশস্ত রুমের
ছোট বিছানাতে নিয়ে শুয়ে পড়ো। 

আমি ভীষণ ব্যস্ত মানুষ 
অবসর মিলে না আমার !
তুমিও দুদন্ড শ্বাস নিতে পারো না
ব্যস্ত রিপোর্ট আর প্রজেক্ট জমা দেওয়ায়।

আমি বৃষ্টি হলে ,আকাশ পানে চেয়েও 
গৃহে ফিরে আসি
যেনো অন্ধকারে শুণ্য হয়ে
তোমার তরে ভাসি।
তুমি রাত জাগা পাখি , 
ভেবেছিলে আমায় সেই কবে?
আকাশ দেখো ঠিক মধ্যেরাতের সাথে
চাঁদটা তোমায় উঁকি দিয়ে
শাসিয়ে যায় অগোচরে। 

আকাশে রক্তিম চাঁদ উঠেছে
তুমি মধ্যে রাতে ঘুম বিসর্জন দিয়ে 
বাঁকা চাঁদ দেখো আজ ও।
আমি ফাল্গুনের প্রথম দিন 
আজ ও হলুদ সাজে সাজি।
জানো,
আমাদের দৈনন্দিন সকল কাজ ই চলছে
তুমি ব্যস্ত ছিলে, ব্যস্ত আছো
আমার ও ক্ষণিকের ছুটি নেই 
কোনো কিছু থেকেই জেনো।
আমি প্রতিদিনই নতুন নতুন পদ রান্না করছি 
তুমি টাইপ করছো তোমরা ঐ আইপ্যাডে রোজ!
কিন্তু আমাদের একটা জিনিস গেছে থেমে
কথার পিঠে কথা ফুরিয়ে গেছে
হাসির আওয়াজ হারিয়ে গেছে।
হয়তোবা কোনো এক  অমাবস্যায় 
নতুবা কোনো নতুন স্বপ্নের খোঁজে।


Saturday, 22 January 2022


আমাদের জীবনে আমরা আমাদের সাথে ঘটে যাওয়া ভালো মুহূর্তগুলো স্মরণ করি না বললেই চলে। আমরা সময় পেলেই স্মরণ করতে থাকি যত খারাপ কিছু ঘটে গেছে খারাপ কিংবা যা আমাদের সাথে এখনো খারাপ ই ঘটছে সেইটুকু। আমরা ছোট ছোট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বড় খুশিকে হর হামেশাই যেতে দেই । আমরা যদি চোখ বন্ধ করেও আমাদের সাথে ঘটে যাওয়া ভালো মুহূর্তগুলো একবার করেও ভাবতাম তাহলে হয়তো এতো ঘৃণা বিদ্বেষ কিংবা হিংসা ঝগড়া বিবাদ হতো না।
সহসা ক্ষমা করতে পারতাম।অথচ এই খারাপ কিছু নিজের সাথে যখন ঘটে যায় তা আমরা মানুষ জাতি,দিনের পর দিন ধরে রাখি যত্ম করে নিজস্ব আলমারিতে। আলমারিতে হয়তোবা ভালো মুহূর্তগুলোর ভীড়ে খারাপ কিছুর জায়গা হতো না সহসা। কিন্তু ঘটনা ঘটে উল্টো! খারাপ কিছুর ভীড়ে ভালো স্মৃতি, ভালো সময়, ভালো সম্পর্কগুলোতে মরীচা পড়ে,আর জং ধরে যায় ধীরে ধীরে।আর এই জং একবার ধরে গেলে সব কিছু হারিয়ে যায় , শুধু সাথে বহন করে বেড়াতে হয় আকাঙ্ক্ষিত মূহুর্তের গল্পগুলো।

Thursday, 13 January 2022


এই শহরের বুকে নানা রঙের আলো জ্বলজ্বল করে সারারাত জুড়ে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই এই শহরের অন্ধকারে ডুবে থাকা নানা রঙের মানুষ চলাফেরা শুরু করে।প্রতিটা মানুষের মধ্যে এই ,এক একটা বাতি জ্বলছে আর নিভছে সব সময়। উঁচু উঁচু অট্টালিকায় ঠাসা এই শহরের মানুষগুলো অসম্ভব ব্যস্ত। কোনো কিছুর ফুসরত নেই তাদের যেনো দু দন্ড জিরিয়ে নেওয়ার।
যেসব মানুষের মাথার উপর সবুজ বাতি জ্বলছে এরা মূলত সুখী মানুষ ধরা যায়।আড্ডা চলছে চায়ের দোকানে, রেস্টুরেন্টে প্রচুর পরিমাণে। নতুন গাড়িটা কেনা হলো, এইতো আজ লাখ টাকার আংটিটা উপহার পাওয়া গেলো কিংবা বউ এর সাথে সমুদ্র সৈকতে সূর্য উদয় হতে দেখে সবাই খুশী অসম্ভব।সবাই কিন্তু ব্যস্ত।কোনো সময় নেই ,তাও ছড়িয়ে পড়ছে সবার সুখের খবর এই নীল শহরের জ্বলজ্বল করা লাল , হলুদ,সুবজ বাতিময় এই শহরের অলিগলিতে।
এই নীলরঙা শহরের আনাচে কানাচে আরো অসংখ্য মানুষ বাস করে কিন্তু তাদের মাথার উপর সবুজ বাতি জ্বলে না। তুলনামূলক এরা নিষ্প্রাণ নগরীতে ধোঁয়ার মতো উড়ে যায় এক পলকেই এমন যেনো। এদের কে সুখী নাকি দুঃখী কোন কাতারে ফালানো যায় তা বোঝা যায় না আপাতত দৃষ্টিতে।এরা অন্ধকারকে আপন ভাবে ।এরা সন্ধ্যা নামার অপেক্ষা করে। 
প্রকৃতপক্ষে এরা তাদের সামনে জ্বলজ্বল করা মানুষকে দেখে আর ভাবে নানা কিছু। তবে কখনো হারিয়ে যায় না। এরা কখনোই হাসতেও ভুলে যায় না। এরা আকাঙ্ক্ষার পারদ আর টিমটিমে আলোর মতো মনের কোণে আশা নিয়ে পড়ে থাকে এই ভেবে আপন শক্তিতে জ্বলে উঠবে একদিন আর নীল এই শহরটায় একদিন হবে সাতরঙা রঙধনু।

Tuesday, 11 January 2022


একটা আকাশ ছিলো আমার
নিজস্ব আকাশ ।
যেখানে হাওয়াই মিঠাই এর মতো
মেঘে ভেসে বেড়াতো , পুরো আকাশ জুড়ে।
আমি খুব ছোট বেলায় স্বপ্ন দেখতাম
হাওয়াই জাহাজে চড়ে,
ঐ মেঘের দেশে যাবো।
গোল গোল নানা রঙের
মেঘ নামক হাওয়াই মিঠাই
টুপ টুপ করে গিলে যাবো অবিরাম।
আমি ভাবতাম ,আমি ঐ আকাশ ছুঁয়ে
দেখবো একদিন।
বৃষ্টি হয়ে,ঝরে পড়বো একদিন।
রৌদ্র হয়ে ঝলসে যাবো
ঐ আকাশ চিরে পৃথিবীর বুকে।
কিন্তু ইদানীং আমার আকাশ ঢেকে যাচ্ছে
ধীরে ধীরে.....
না কোনো দুঃখের স্রোতে নয়,
কোনো আবেগের গল্পে নয়।
আমার আকাশ ঢেকে যাচ্ছে
চারদিকে কংক্রিটের বড় বড় দালানে।
যে পুবের আকাশে আমি রোজ সূর্য উদয়
হবার দৃশ্য দেখার সাক্ষী হতাম,
ঠিক সেখানটা ঢেকে গেছে একটা বড় কংক্রিটের জঙ্গলে।
আমার উচ্চতা নিতান্তই কম
কিন্তু ঠিক কতটুকু উচ্চতা হলে আমি ঐ আকাশ
পুনরায় দেখতে পাবো,
খুব করে ভাবি প্রায়শই।
উত্তরের আকাশে আগে আমি তারা খুঁজতাম
রমজান মাসে সেহরির সময়,
এখন সেই আকাশে শুধু ফানুস উড়তে দেখা যায় ,আর ফোটে অসংখ্য আতশবাজি।
দক্ষিণের দিক থেকে যে হাওয়া আসতো
সেখানে একটা পুকুর ছিলো
নানা পদের মাছ ছিলো ,সাপ ছিলো
কি শীতল হাওয়ার একটা ,ছোঁয়া পেতাম রোজ!
ভরাট করে , সেখানে আজ সারি সারি দালান।
বাকি রইলো পশ্চিম দিকের আকাশ এর গল্প,
সেখানে শুধু প্রতিযোগিতা চলছে যেনো!
এ যেনো এক অবাক যুদ্ধ,
নিঃশ্বাস ত্যাগ করার ও জায়গা
নেই কোথাও যেনো এক বিন্দু।
কে কত বড় বড়, কংক্রিটের দালান
করতে পারে,শহর জুড়ে
দিন থেকে রাত
আর রাত থেকে দিন ,যেনো
এই পরিকল্পনাই চলছে।
আফসোস আমার আকাশটা          
মলিন হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
সেখানে আমি শুভ্রতা দেখি না
শুনি না ঝমঝম বৃষ্টির শব্দ।
দেখি শুধু কিছু ক্লান্ত শ্রান্ত শ্রমিক
যারা ইট পাথরের শব্দে
পুরো আকাশ জুড়ে একটা শোক
সৃষ্টি করে চলেছে প্রতিনিয়ত!

পরশু

খুব করে প্ল্যান করলাম পরশু সকালে যাবো শিউলি ফুল কুড়াতে , ঠিক আমার উল্টো পাশের বাসায়। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি রোজ যাবো যাবো করে আর যাওয...